রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড (Radiant Fish World) পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরের ঝাউতলায় অবস্থিত একটি ফিস অ্যাকুরিয়াম (Aquarium) এবং ফিশ মিউজিয়াম। এ্যাকুরিয়াম কমপ্লেক্সে আছে সাগর ও মিঠা পানির প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ। বিরল প্রজাতির মাছ সহ এখানে আছে হাঙ্গর, পিরানহা, শাপলাপাতা, পানপাতা, কাছিম, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শৈল, পিতম্বরী, সাগর কুঁচিয়া, বোল, জেলিফিস, চেওয়া, পাঙ্গাস, আউস সহ আরও অনেক মাছ ও জলজ প্রাণী। ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পুকুর ও সাগরের তলদেশের বৈচিত্রময় পরিবেশ। ভেতরের সুন্দর ডেকোরেশন অ্যাকুরিয়ামটিকে আরও নান্দনিক করে তুলেছে। অ্যাাকুরিয়ামে ঢুকলে মনে হবে আপনি সাগরের তলদেশে আছে, আর আপনার চারপাশে খেলা করছে বর্ণিল প্রজাতির নানা মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী। ইচ্ছে করলে দেখতে পারবেন থ্রিডি শো। পুরো অ্যাকুরিয়ামটি ভালো করে ঘুরে দেখতে সময় লাগবে প্রায় ২ ঘন্টা।
কক্সবাজার (Cox’s Bazar) শহরের ঝাউতলায় নির্মিত রেডিয়েন্ট ফিশ অ্যাকুরিয়াম কমপ্লেক্সটিকে সর্বমোট ৮টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। ৮টি জোনের মধ্যে রয়েছে থ্রি-নাইন ডি মুভি দেখার নান্দনিক স্পেস, দেশী-বিদেশী নানা প্রজাতির পাখি, ছবি তোলার আকষর্ণীয় ডিজিটাল কালার ল্যাব, কেনাকাটা করার জন্য দোকান যেখানে হস্তশিল্পসহ অনেক ধরনের জিনিস পাবেন, লাইভ ফিশ রেস্টুরেন্ট, প্রার্থনা কক্ষ, শিশুদের জন্য খেলাধুলার জোন, বিয়ে বা পার্টির করার
হল ও ছাদে প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি আয়োজন করা যাবে বার-বি কিউ। এছাড়া রয়েছে সুপরিসর পার্কিং ও লাগেজ রাখার লকার। এখানেই এসে কোন রকম বিরক্তি ছাড়াই কিভাবে নিমিষেই ৪ থেকে ৫ ঘন্টা কেটে যাবে বুঝাই যাবে না। পুরো সেন্টার নিরাপত্তা বেষ্টনী সিসিটিভির আওতায় সর্বক্ষণ নিরীক্ষণ করা হয়।
রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড, মালেশিয়ার টেকনিক্যাল প্রকৌশলির সহায়তায় নির্মিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের এই এ্যাকুরিয়াম নির্মাণে সময় লেগেছে দুই বছর। এই এ্যাকুরিয়ামে বঙ্গোপসাগরের থাকা বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মৎস্য সংক্ষণ করা হয়েছে। অচেনা এবং বিলুপ্ত প্রায় অনেক মাছও রয়েছে। সাগরের বিলুপ্ত মাছ বিভিন্ন প্রাণী সংরক্ষণে একটি জাদুঘরও করা হচ্ছে। এটা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এটি সাগরের জীববৈচিত্র ও প্রাণী সম্পর্কে জানার একটি শিক্ষা কেন্দ্র।
প্রবেশ ফী
এই ফিশ ওয়ার্ল্ডে প্রবেশের জন্যে ফি ৩০০ টাকা। এছাড়া থ্রিডি শো এর টিকেট মূল্য ৫০ টাকা। সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্যে খোলা থাকে।
যাওয়ার উপায়
রেডিয়েন্ট ফিস অ্যাকুরিয়াম দেখতে কক্সবাজারের যে কোন জায়গা থেকে সিএনজি/ইজিবাইক/অটোরিক্সা দিয়ে যেতে পারবেন। কলাতলী বীচের সড়কেই পাবেন সব যানবাহন। কলাতলী থেকে ইজিবাইক রিজার্ভ নিলে ভাড়া নিবে ৫০-৭০ টাকা। লোকাল ইজিবাইকে ১৫-২০ টাকা দিয়েই চলে যেতে পারবেন ঝাউতলা। পৌষী রেস্টুরেন্ট এর সামনের মোড় থেকে হাতের বাম পাশে অল্প কয়েক কদম গেলেই পেয়ে যাবেন রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড।
যোগাযোগ এবং ঠিকানা
২৯ ঝাউতলা, প্রধান সড়ক, কক্সবাজার।
মোবাইল: 01701-289714, 01701-289711, 01701-289712, 01701-289713।
ই-মেইল: [email protected]
কোথায় থাকবেন
কক্সবাজার প্রায় পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল বা কটেজ আছে। এদের মধ্যে মারমেইড বিচ রিসোর্ট, সায়মন বিচ রিসোর্ট, ওশেন প্যারাডাইজ, লং বীচ, কক্স টুডে, হেরিটেজ, সী প্যালেস, সী গাল, কোরাল রীফ, নিটোল রিসোর্ট, আইল্যান্ডিয়া, বীচ ভিউ, সী ক্রাউন, ইউনি রিসোর্ট, উর্মি গেস্ট হাউজ, কোরাল রীফ, ইকরা বিচ রিসোর্ট, অভিসার, মিডিয়া ইন, কল্লোল, হানিমুন রিসোর্ট, নীলিমা রিসোর্ট উল্লেখ্য।
খাওয়া দাওয়া
কক্সবাজারে আছে নানা মানের রেস্টুরেন্ট। খেতে পারবেন আপনার পছন্দমত জায়গায়। প্রায় প্রতিটি হোটেলেই আছে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। রেডিয়েন্ট ফিশ এ্যাকুরিয়াম কমপ্লেক্সেই আছে খাবার রেস্টুরেন্ট। এছাড়া কাছেই আছে সবার পরিচিত পৌষী ও ঝাউবন রেস্তোরা।
বাংলাদেশের অনেক জায়গায় এখন বন্যা হচ্ছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ সহ বেশ কিছু জেলা বন্যায় প্লাবিত। তাই এই সময় এসব স্থান ভ্রমণ তালিকা থেকে বাদ দিন এবং সম্ভব হলে বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। আপনার আমার সামান্য সামান্য কন্ট্রিবিউশনগুলোই একসাথে অনেক বড় হবে।
পাঠকের মতামত